নিজস্ব প্রতিবেদন, বাংলা কাগজ : গতকালই (রোববার- ১৩ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বললেন- ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও উষ্ণ, মসৃণ ও ভবিষ্যৎমুখী হয়েছে। ঠিক তার পরদিনই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করল ভারত। অবশ্য আজ সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভারতে ইলিশ যাওয়ার পরও দেশটি থেকে কোনও পেঁয়াজ আসে নি। এক্ষেত্রে আজ থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পেঁয়াজ রপ্তানি। যেখানে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- পেঁয়াজ তাঁরা রপ্তানি করবেন, তবে তাঁদেরকে বাড়তি দাম দিতে হবে।
জানা গেছে- সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেনাপোলের ওপারের পেট্রাপোলে আটকা পড়ে পেঁয়াজভর্তি প্রায় ১৫০টি ট্রাক। একই অবস্থা অন্যান্য স্থলবন্দরেও।
ভারতের শুল্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কিছু নীতিগত পরিবর্তন হওয়ার কারণে পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ হয়।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দিয়ে কোনও পেঁয়াজের গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করে নি। বেনাপোল বন্দর দিয়ে সকালের দিকে ৫০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ প্রবেশের পরপরই দেশের সবগুলো বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের সংগঠন। বিকেলের দিকে দুই ট্রাক পদ্মার ইলিশ ভারতে রপ্তানি করলেও পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানিতে তাদের মন গলে নি। অথচ সকাল থেকেই ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখলেও বাংলাদেশ কেন ইলিশ পাঠালো, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে বড় প্রশ্ন।
জানতে চাইলে বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোল রপ্তানিকারক সমিতির পক্ষে ব্যবসায়ী কার্তিক ঘোষ বলেন- পেঁয়াজ রপ্তানিকারক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৭৫০ মার্কিন ডলারের নিচে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না। সে কারণে অনেকগুলো পেঁয়াজভর্তি ট্রাক বর্ডারে দাঁড়িয়ে আছে।
বেনাপোলের পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল জানান- ভারতের সঙ্গে আমদানি বাণিজ্য শুরুর পর থেকে ২৫০ মার্কিন ডলারে পেঁয়াজ আমদানি হয়ে আসছে। ভারতের নাসিকে বন্যার কারণে সেখানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের রপ্তানিকারকরা স্থানীয় বাজার দর হিসাবে ৭৫০ ডলারের নিচে বাংলাদেশে পেঁয়াজের রপ্তানি করবে না। এ কারণে তাঁরা পেঁয়াজের রপ্তানি সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতের বনগাঁ এলাকার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী অনিল মজুমদার টেলিফোনে জানান- বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে তাদের আপত্তি নেই। বাজার দরে এলসি পেলে তাঁরা পুনরায় রপ্তানি শুরু করবে। সে ক্ষেত্রে পুরনো যে সব এলসি দেওয়া আছে সেগুলো ২৫০ মার্কিন ডলার সংশোধন করে সংশোধিত মূল্যে এবং নতুন এলসি ৭৫০ মার্কিন ডলার করা হলে পেঁয়াজের রপ্তানিপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, ভারত কোনও ঘোষণা ছাড়াই মূল্যবৃদ্ধির দাবিতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। পারস্পরিক বাণিজ্যে সমঝোতার বিকল্প নেই। তারা রপ্তানি বন্ধ না করে পেঁয়াজের আমাদানিকারকদের সময় বেঁধে দিতে পারতেন। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয় নি।
এদিকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধের খবরে নড়েচড়ে বসেছে বেনাপোলসহ বিভিন্ন স্থানের পেঁয়াজের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যার আগেই খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ক : পেঁয়াজ বিক্রি করবে টিসিবি