রুমি হক, পাঠক, বাংলা কাগজ : রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে হস্তান্তর করা হয়েছে ডিবি’র (গোয়েন্দা পুলিশ) হাতে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) তাঁকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়ার কথা রয়েছে। এক্ষেত্রে সবগুলো দিনের রিমান্ড পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
যাক সেসব কথা- এখন আসা যাক মূল আলোচনায়- যেটি হলো- সাহেদ যদি এতই ধুরন্ধর হবেন, তবে কেন তিনি নিজের গ্রামের নিকট দিয়েই ভারতে পালাতে চাইবেন?
- সাহেদকে ধরার পর হাতকড়া লাগানো অবস্থায়ও কেন তাঁর সঙ্গে থাকা পিস্তলের ছবি প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে?
- শুধু গোফ ফেলে দিয়ে চুলে রঙ করলেই কি একজন মানুষকে চেনা যায় না? না-কি বোরখা পড়ে সহজেই সীমানা পার হওয়া যায়?
- আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে- মানুষ গমণাগমণের পথগুলোতে তাঁদের কঠোর নজরদারি ছিল, তাহলে কি অন্য পথগুলো পলায়নকারীরা ব্যবহার করেন না? না-কি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার লোকবল কম? প্রধানমন্ত্রী কি গোয়েন্দা খাতে কম বরাদ্দ প্রদান করেন?
- স্থানীয় থানায় মামলা রুজু না করেই কেন ঠিক নয়টার মধ্যে সাহেদকে আনা হলো তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে।
- সাহেদের পালিয়ে থাকা নয়দিনের ব্যাপারে কি সব তথ্য প্রকাশ করা হবে? যাতে সাধারণ মানুষও ভবিষ্যতে ‘জনতাই পুলিশ, পুলিশই জনতা’- আদলে চোখ-কান খোলা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে যখনই কোনও দুষ্কৃতিকারি পলায়নের চেষ্টা করবে বা নিজেকে আড়ালের চেষ্টা করবে; তখনই যেন তা ধরে ফেলতে পারে সাধারণ মানুষ। যাতে সহযোগিতা হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর।
- সাহেদ যে এতোদিন নিজেকে বিভিন্ন বাহিনীর নানা পদে আছেন বলে পরিচয় দিয়েছিলেন, সেগুলো কি দেশের কারও চোখেই কোনোদিন পড়েনি। তাহলে কেন এতোদিন চুপচাপ ছিলেন সংশ্লিষ্টরা।
- আমরা কি এখনও সাহেদকে দেখেও বুঝতে পারছি না, দেশে বর্তমানেও এ ধরনের ধুরন্ধর ব্যক্তি অনেক থাকতে পারেন বা রয়েছেন; ফলে তাঁদের মুখোশ আমাদের উন্মোচন করে দেওয়া কি জরুরি নয়?
- সাহেদের হাসপাতাল দীর্ঘ ছয় বছর মেয়াদ উত্তীর্ণ (লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৪ সালে) থাকার পরও এতোদিন তাহলে কীভাবে খোলা ছিল?
- জামায়াতের ঘাঁটি বলে খ্যাত সাতক্ষীরা থেকে কী আর কেউ প্রতারণার মাধ্যমে ফুলেফেঁপে উঠেছেন? উঠলে তাঁরা কারা? তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? আর নেওয়া হলে কবে?
- সাহেদের একান্ত হিসেবে পরিচিত ও তাঁর মুখপাত্র তরিক শিবলী কি গুরুত্বপূর্ণ কোনও তথ্য প্রদান করেছেন? করলে সেগুলো কি তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়। না-কি প্রকাশ করে বা প্রকাশ না করে সাহেদের আরও অপকর্মের (প্রতিষ্ঠান) বিষয়ে অভিযান চালানো হবে। এ বিষয় কি জানানো যায়?
- করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে কি যে কোনও একটি বাহিনীকে দায়িত্ব প্রদান করা যায়? না-কি দেশের বাহিনীগুলোর মধ্যে কোনও সমন্বয়হীনতার অভাব নেই। না থাকলে তো অনেক ভালো। এমন অবস্থায়- সব বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য খাতে কি শিগগির আমরা কোনও বড় অভিযান দেখতে পাব? না-কি আর কোনও প্রতিষ্ঠানেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি?
(ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক)।
(লেখাটি পাঠকের একান্তই ব্যক্তিগত মত, তবে এটি বাংলা কাগজের পক্ষ থেকে সম্পাদনা করে প্রকাশ করা হলো)।