নিজস্ব প্রতিবেদন, বাংলা কাগজ : পবিত্র ইদুল আজহা উপলক্ষে ঋণ খেলাপি চামড়া ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে তারা ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন। এই সুবিধা পেতে হলে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে বলে রোববার (৫ জুলাই) এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চামড়া শিল্পে সারা বছর ধরে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেকের যোগান আসে প্রতিবছর ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া থেকে।
“এ সময় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হলে একদিকে মূল্যবান কাঁচামাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিয়মিতভাবে পরিশোধ না হওয়ায় এ খাতের কিছু ঋণ খেলাপি (শ্রেণিকৃত) হয়ে পড়ছে। ফলে এ খাতে স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহ বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না।
“এই পরিস্থিতিতে, আসন্ন ঈদুল আজহা উৎসবে কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণ কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পাদনের লক্ষ্য সামনে রেখে কাঁচা চামড়া ক্রয়ের জন্য প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীদের নিকট অর্থ প্রবাহ সচল রাখার উদ্দেশ্যে তাদের অনিয়মিত ঋণ পুনঃতফসিলের বিষয়ে পাঁচটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”
গত ৩০ জুন ঋণের যে স্থিতি ছিল, তার ন্যূনতম ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ইতোপূর্বে আদায় করা কিস্তি ডাউন পেমেন্ট হিসেবে গণ্য হবে না।
ঋণ গ্রহীতাদের আওতার বাইরে কোনো কারণে ঋণ শ্রেণিকৃত হয়ে থাকলে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল থাকলে এ সার্কুলারের আওতায় পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া যাবে।
কেইস-টু-কেইস ভিত্তিতে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ তলবি ও চলমান ঋণ সর্বোচ্চ ছয় বছর মেয়াদে এবং মেয়াদী ঋণ সর্বোচ্চ আট বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে।
কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কেনার জন্য নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ‘কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট’ গ্রহণের শর্ত শিথিল করা যাবে।
৩০ জুলাইয়ের মধ্যে এ সার্কুলারের আওতায় ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চামড়া খাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণই সোয়া ৩ হাজার কোটি টাকা। যার বেশির ভাগই দীর্ঘদিনের পুরনো ঋণ।
এই সোয়া ৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের ৯০ শতাংশই আবার রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের।