নিজস্ব প্রতিবেদন, বাংলা কাগজ : পৌরসভা নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নতুন জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন ২৯ পৌর এলাকায় পৌনে ১৪ লাখ ভোটার।
এ ছাড়া কুমিল্লার দেবিদ্বার, শৈলকুপা, ফরিদপুরের মধুখালী ও রাজশাহীর পবায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হচ্ছে।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে এসব এলাকায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
আগের ৪ ধাপের পৌর ভোটে গোলযোগ-সহিংসতায় উদ্বেগের মধ্যে নির্বাচন কমিশন এবার ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
নির্বাচনি এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বাড়তি সদস্য মাঠে নেমেছেন। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে নির্বাহি ও বিচারিক হাকিমরাও মাঠে রয়েছেন।
ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বাংলা কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি- ফ্রি, ফেয়ার, পার্টিসিপেটারি এবং উৎসবমুখর পরিবেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে এ নির্বাচনে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেছে ইসি।
মেয়র পদে দলীয় প্রতীকের এ ভোটে কয়েকটি দল অংশ নিলেও বরাবরের মতই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে।
ভোট তথ্য : ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বাংলা কাগজকে জানান, এ ধাপে নির্বাচনি লড়াইয়ে মেয়র পদে রয়েছেন ১০০ প্রার্থী। আর সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৪২ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১ হাজার ২৭০ জন প্রার্থি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২৯ পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৫ জন।
১৯ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে নির্বাচনের জন্য ৩১ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। পরে অন্য ধাপ থেকে পঞ্চমে যুক্ত হয় নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা।
অন্যদিকে উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে যশোর পৌরসভার ভোট স্থগিত করা হয়। ভোটগ্রহণের আগ মুহূর্তে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে ইসি।
চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলরসহ সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। ফলে সব মিলিয়ে ২৯ পৌরসভায় ভোট হচ্ছে রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি)।
যেসব পৌরসভায় ভোট : চট্টগ্রামের মীরসরাই, বারইয়ারহাট ও রাঙ্গুনিয়া; জামালপুর সদর, মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর; রাজশাহীর চারঘাট ও দুর্গাপুর; ভোলা সদর ও চরফ্যাশন; চাঁদপুরের মতলব ও শাহরাস্তি; ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর; লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, হবিগঞ্জ সদর, বগুড়া সদর, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, কিশোরগঞ্জের ভৈরব, যশোরের কেশবপুর, মাদারীপুর সদর, রংপুরের হারাগাছ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, জয়পুরহাট সদর, মাদারীপুরের শিবচর, ময়মনসিংহের নান্দাইল ও গাজীপুরের কালীগঞ্জ এবং নীলফামারীর সৈয়দপুর।
৪ ধাপে ফল : আওয়ামী লীগ ১১৫, বিএনপি ১০, স্বতন্ত্র ৩০।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এবার ৬ ধাপে পৌরসভা নির্বাচন করছে কমিশন।
প্রথম ধাপের তফসিলের ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের, তৃতীয় ধাপের ভোট হয় ৩০ জানুয়ারি এবং চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণ হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি।
সবশেষ চতুর্থ ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৬ জন, বিএনপির ১ জন ও ৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র হিসেবে জয়ি হন। তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৬ জন, বিএনপির ৩ জন ও স্বতন্ত্র ১৪ জন মেয়র নির্বাচিত হন।
দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৫ জন, বিএনপির ৪ জন, জাতীয় পার্টির ১ জন, জাসদের ১ জন এবং ৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ি হন।
আর প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থিদের মধ্যে ১৮ জন, বিএনপির ধানের শীষের ২ জন এবং ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থি মেয়র পদে বিজয়ি হন।
সবশেষ ১৫ ফেব্রুয়ারির চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এর আগে ২৮ ডিসেম্বরের প্রথম ধাপে ৬৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারির ৬২ শতাংশ এবং ৩০ জানুয়ারির তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ৭০ দশমিক ৪২ শতাংশ ভোট পড়ে।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পঞ্চম ধাপের ভোট শেষে ১১ এপ্রিল ষষ্ঠ ধাপে ৯ পৌরসভায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া আগে অনুষ্ঠিত ৭টি পৌরসভায় বন্ধ ঘোষিত ভোটকেন্দ্রগুলোতে এবং মৃত্যুজনিত কারণে চট্টগ্রাম সিটির ৩১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে, ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ও সিরাজগঞ্জ পৌরসভর ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদেও ভোট হবে এদিন। এরমধ্যে চট্টগ্রাম সিটির ওই ওয়ার্ড ও শৈলকুপায় ভোট হবে ইভিএমে।