নিজস্ব প্রতিবেদন, বাংলা কাগজ : করোনাভাইরাস মানুষের বিনোদনের সুযোগ কিছুটা কেড়ে নিলেও ঢাকায় জাতীয় চিড়িয়াখানার বাসিন্দাদের দিয়েছিলো ৭ মাসের স্বস্তি; সেই অবসরের সুফল এখন মিলছে বিভিন্ন প্রাণি পরিবারে নতুন অতিথির আগমনের খবরে।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক আবদুল লতিফ জানান, মহামারির সময়টায় বিভিন্ন প্রাণির ১২০টি শাবকের জন্ম হয়েছে, যারমধ্যে ৪টি জন্মেছে সম্প্রতি।
‘চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকার কারণে পশুপাখির উপকার হয়েছে, ইমিউনিটি বেড়েছে। খাবার ভালো দিতে পেরেছি, পরিচর্যা ভালো হয়েছে। ওই সময় প্রাণিরা গর্ভধারণ করায় এখন তারা সন্তান প্রসব করছে।’
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি এবং ১১ মার্চ একটি করে ঘোড়া, ২ মার্চ একটি জলহস্তি ও ৫ মার্চ একটি জেব্রা শাবক জন্ম নিয়েছে।
এরআগে গত বছর একটি জিরাফ, দুটি জলহস্তি, ১৮টি চিত্রা হরিণ, একটি মায়া হরিণ, একটি ঘোড়া, দুটি ইম্পালা, দুটি গাধা, একটি কমন ইল্যান্ড, ২৩টি ময়ূর, ১৩টি ইমু, ৩০টি বক, সাতটি ঘুঘু ও ১৫টি কবুতরসহ ১১৬টি শাবক জন্ম নিয়েছে।
মিরপুরে ১৮৬ একরের চিড়িয়াখানায় নতুন-পুরানো মিলিয়ে এখন ২ হাজার ৮২০টি প্রাণি রয়েছে।
অনেক শাবক জন্মালেও করোনাভাইরাসের কারণে বাইরে থেকে নতুন প্রাণি আনা সম্ভব হয় নি বলেই জানান চিড়িয়াখানার পরিচালক।
তিনি বলেন, ‘কোভিডের কারণে ২ কোটি টাকার দরপত্র বাতিল করে দিতে হয়েছে। প্রাণি এখন কেনা যাচ্ছে, কিন্তু আনার ব্যবস্থা নেই।’
দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে নতুন প্রাণি আনার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে আবদুল লতিফ বলেন, ৪টি লটে ১ জোড়া করে কমন ইল্যান্ড, শিম্পাঞ্জি, ক্যাঙ্গারু, কালো ভালুক, চশমা বানর এবং আফ্রিকার সিংহসহ ৮ ধরনের প্রাণি আনার কথা ভাবছেন তাঁরা।
চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা গেছে, অবকাঠামোর উন্নয়ন কাজ চলছে। ১ মাসের মধ্যে এসব কাজ শেষ হবে জানিয়ে আবদুল লতিফ বলেন, ‘গণ্ডার, ময়ূর আর হাতির জন্য নতুন শেড করছি। বাঘ ও সিংহের খাঁচার সংযোগ পথও নির্মাণ করা হচ্ছে।’
পরিচালক জানালেন, এখন দর্শনার্থি সমাগম হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের মতোই।
সাপ্তাহিক খোলার দিনগুলোতে সাধারণত ৮ থেকে ১০ হাজার এবং ছুটির দিনে ২০ থেকে ৩০ হাজার দর্শনার্থির সমাগম হচ্ছে বলেই জানান তিনি। তবে দর্শনার্থিদের স্বাস্থ্যবিধি মানা ও মাস্ক পড়ার ব্যাপারে চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে নিয়মিত অনুরোধ করা হয়ে থাকে বলেই জানান তিনি।