নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলা কাগজ; কেয়া প্রামাণিক, ঝিনাইদহ : কোনও প্রকার টেন্ডার বা কোটেশন ছাড়াই রাস্তার দুই পাশের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে ‘দুর্বৃত্তরা’।
১০ দিন ধরে প্রকাশ্যে রাস্তার গাছ কেটে বিক্রি করা হলেও শৈলকূপার প্রশাসন নির্বিকার বলেই অভিযোগ উঠেছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যেন ‘সরকারি মাল, দরিয়ামে ঢাল’ অবস্থা।
গ্রামবাসির ভাষ্যমতে, ১০ দিনে প্রায় ৫ লাখ টাকার গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই দৃশ্য ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের বাগুটিয়া গ্রামের রায়পাড়ার।
সরেজমিন দেখা গেছে, বকশিপুর থেকে একটি কাঁচা সড়ক নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের বাগুটিয়ার ভেতর দিয়ে গেছে।
এই সড়কের দু’ধার দিয়ে রয়েছে মেহগনি ও কড়াইসহ বহু মূল্যবান গাছ।
বাগুটিয়া রায়পাড়া অংশের বেশিরভাগ গাছ বিক্রি করেছে হটিফাজিলপুর গ্রামের শফিকুল নামের এক ব্যক্তি। তার কাছ থেকে ওই গাছ কিনেছে হাটফাজিলপুরের ইটভাটা মালিক মানিক মোল্লা।
মেহগনি ও কড়াই গাছগুলো কেটে নেওয়া হচ্ছে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের সদস্য আমজাদ মোল্লার ইটভাটাতে।
গাছ ক্রেতা মানিক মোল্লা জেলা পরিষদ সদস্য আমজাদ মোল্লার ভাই।
গাছ কাটা শ্রমিক নজরুল ইসলাম ও আমির হোসেন জানান, হাটফাজিলপুরের শফিকুল তাদের এই গাছ কাটতে বলেছে।
গাছ টানার কাজে নিয়োজিত পরিবহন শ্রমিক বাদশা মিয়া জানান, হাটফাজিলপুরের আমজাদ মোল্লার ইট ভাটাতে এসব গাছ রাখা হচ্ছে।
পথচারি কাজল মণ্ডল অভিযোগ করেন, কয়েকদিন ধরে এসব সরকারি গাছ কাটা হলেও কেউ বাধা দিচ্ছে না।
গাছ ক্রেতা মানিক মোল্লা বাংলা কাগজের কাছে দাবি করেন, ‘শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে আমি ৭০ হাজার টাকা দিয়ে এসব গাছ কিনে নিয়েছি।’
জানতে চাইলে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের সদস্য আমজাদ হোসেন মোল্লা বাংলা কাগজকে বলেন, আমি তো গাছ কাটার বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি জেনে আপনাকে জানাবো।
সরকারি গাছ বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বাংলা কাগজের কাছে দাবি করে বলেন, ‘রাস্তা সরকারি হলেও রাস্তার পাশের জায়গা আমাদের। গাছগুলো আমরাই লাগিয়েছি।’
শৈলকূপা এলজিইডি অফিসের প্রকৌশলী রওশন হাবিব জানান, এসব রাস্তার গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ইউনিয়ন ভূমি অফিসের। ফলে গাছ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া না নেওয়া তাদের ব্যাপার।
স্থানীয় নিত্যানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বাংলা কাগজের কাছে দাবি করেন, ‘রাস্তা কাদের তা আমি জানি না। তবে চুরি করে গাছ কাটা হচ্ছে।’
শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা লিজা বাংলা কাগজকে বলেন, রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের হলে সেটি বাস্তবে কতটুকু তা দেখতে হবে।
‘স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তিনি রিপোর্ট দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’